Home » , » কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরনের মিসইল হমলা || আমেরিকার উপর প্রতিশোধ নিলো ইরান || এর পর কী?

কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরনের মিসইল হমলা || আমেরিকার উপর প্রতিশোধ নিলো ইরান || এর পর কী?

কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরনের মিসইল হমলা || আমেরিকার উপর প্রতিশোধ নিলো ইরান ||                                     এর পর কী?





আসসালামু আলাইকুম। কিছুক্ষণ আগে কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে। ইরানের মিসাইলগুলো কাতারের আকাশপথ দিয়ে প্রবেশ করে মার্কিন ঘাঁটিতে আঘাত করেছে। বলা হচ্ছে, অন্তত ১০টি মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছে, যার মধ্যে তিনটি মিসাইল লক্ষ্যভ্রষ্ট না হয়ে সরাসরি ঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে। প্রশ্ন উঠছে, কেন এই মুহূর্তে ইরান কাতারে হামলা চালালো? কাতার তো ছিল আরব বিশ্বের মধ্যে ইরানের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর একটি, বলা যায়, সবচেয়ে ঘনিষ্ঠই। সেই রাষ্ট্রেই এখন ইরান মিসাইল হামলা চালিয়েছে।




প্রশ্ন উঠছে— কেন এতগুলো মিসাইল কাতারের আকাশ দিয়ে নিক্ষেপ করা হলো? কাতারের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কীভাবে এই মিসাইলগুলো প্রতিহত করলো, বা কতগুলো ঠেকাতে সক্ষম হলো?

এই মিসাইল হামলার মাধ্যমে ইরান আসলে কী বার্তা দিতে চাইছে? ইরান কি এই যুদ্ধকে আরও বড় পরিসরে নিয়ে যেতে চাইছে, শতভাগ প্রস্তুতি নিয়ে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে চাইছে? নাকি এটি অন্য কোনো কৌশলগত বার্তা পাঠানোর একটি পদক্ষেপ?

এই প্রশ্নগুলোর উত্তর যদি আপনাদের কাছে থাকে, অবশ্যই লিখে জানাবেন।

এছাড়া, কাতার থেকে আমাদের এক দর্শক, তার নিজ বাসা থেকে একটি ভিডিও পাঠিয়েছেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে— প্রচুর পরিমাণে মিসাইল কাতারের আকাশে ছুটে যাচ্ছে। এটা এক বা দুইটা নয়, অনেকগুলো।

আপনারাও নিশ্চয়ই ভিডিও ফুটেজগুলো দেখেছেন। বিভিন্ন খবরে বলা হচ্ছে— কোথাও ৬টা মিসাইল, কোথাও ১০টা, আবার কোথাও বলা হচ্ছে ১৫টা পর্যন্ত হতে পারে।
আসলে কতগুলো মিসাইল ছোড়া হয়েছে, সেটা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে ভিডিওগুলো দেখে বোঝা যাচ্ছে যে সংখ্যাটি নেহাত কম নয়।


আপনাদের একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পরিষ্কার করে বলি — মিসাইলগুলো ইরান থেকে সরাসরি নিক্ষিপ্ত হয়নি বরং কাতারের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম পাল্টা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে ওই মিসাইলগুলো নিষ্ক্রিয় করার জন্য কাজ করেছে।

সুতরাং, আমরা বলতে পারি—কাতারের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম বেশ কিছু মিসাইল সফলভাবে ধ্বংস করেছে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে—এই হামলা কেন করা হলো?
এই প্রশ্নের উত্তর বোঝার জন্য আগে একটু দেখে নিই—আজ সারাদিন কাতারে কী ঘটেছে? তাহলে পুরো পরিস্থিতি অনেকটাই পরিষ্কার হবে।

আজ সকাল থেকেই কাতার সরকার ঘোষণা করেছে যে তারা আকাশসীমা বন্ধ করে দিচ্ছে। দেশের সাধারণ নাগরিকদের রাস্তায় বের না হতে অনুরোধ করা হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কারণ—যেকোনো সময় বড় ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে—এমন সতর্কতা জারি করা হয়েছিল।

হামলা হতে পারে—এই আশঙ্কায় কাতারকে আগে থেকেই প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছিল এবং মার্কিন ঘাঁটিগুলো খালি করার নির্দেশও দেয়া হয়।

মূলত এই তথ্য ইরানের পক্ষ থেকেই কাতারকে জানানো হয়েছিল। এটা এখন মোটামুটি পরিষ্কার।

ইরান কাতারকে আগেই জানিয়ে দিয়েছে—
"ভাই, তুমি তো আমাদের বন্ধু। তুমি আমার পাশে ছিলে, আমাদের কঠিন সময়ে সাথ দিয়েছ। কিন্তু এই মুহূর্তে আমার আর কোনো উপায় নেই।
তোমার দেশে থাকা মার্কিন ঘাঁটিতে আমাদের হামলা চালাতেই হবে। আমেরিকা যেভাবে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে, আমাদেরও পাল্টা জবাব দিতে হবে। আর এই জবাবটা এখন যদি শুধুই ইরাকের ভেতর দেই, তাহলে সেটা সমান-সমান প্রতিক্রিয়া হবে না। এ জন্য আমাদের কাতারের ভেতরেই এই হামলা চালাতে হবে।"




"যদি ইরান অন্য কোনো দেশে—ধরুন সংযুক্ত আরব আমিরাত বা সৌদি আরবে—এই হামলা চালাতো, তাহলে ওই দেশগুলো এটাকে নিজেদের সম্মানের প্রশ্ন মনে করে সরাসরি ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ত।
তখন নতুন করে শত্রুতা তৈরি হতো।

তাই ইরান কাতারকে জানিয়েছে—'ভাই, আমি তোমার দেশে এই হামলা চালাব। এই হামলায় যেন প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম হয়, সে জন্য তুমি আগেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখো।'

এখন কাতার বলছে—'ইরান আমার ভূখণ্ডে হামলা চালিয়ে আমার স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, দেশের অখণ্ডতা লঙ্ঘন করেছে। তাই আমারও অধিকার রয়েছে ইরানের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ চালানোর।'
এটা তো স্বাভাবিক—যে কোনো রাষ্ট্রই বলবে, 'আমার ভূখণ্ডে হামলা হয়েছে, আমি পাল্টা ব্যবস্থা নেব।'

কিন্তু আদৌ কাতার এই পাল্টা আক্রমণে যাবে কিনা—এটা এখনো নিশ্চিত নয়।
আমরা জানি, কাতার এর আগেও একাধিকবার বলেছে—'আমেরিকা-ইরানের মধ্যে, ইসরাইল-ইরানের মধ্যে যেন একটা সমঝোতা হয়। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ সমাধান হোক। দরকার হলে কাতারের রাজধানী এই সমঝোতার জন্য প্রস্তুত।'

কিন্তু ঠিক সেই রাজধানী থেকেই আজ ইরানের মিসাইল হামলা হয়েছে। এখন দেখার বিষয়—ইরানের পক্ষ থেকে ঠিক কী বক্তব্য আসে।"


ইরানের পক্ষ থেকে যে বক্তব্যগুলো আসছে, সেগুলোর মূল কথা হলো—
"এই হামলা ছাড়া আমার কোনো উপায় ছিল না। এই পাল্টা হামলা আমার করতেই হবে। আর এজন্যই আমি আমার ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ—কাতারের ভেতরেই এই হামলা করেছি।

কাতারের জনগণের কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। কারণ, তাদের কিছু সাময়িক সমস্যা হতে পারে। কিন্তু স্পষ্ট করে বলছি—কাতারের জনগণ এই হামলার টার্গেট নয়। টার্গেট একটাই—মার্কিন সামরিক ঘাঁটি।

আর আমরা জানি—কাতারে যে মার্কিন ঘাঁটি রয়েছে, সেটা এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় ঘাঁটি। এখানেই সেন্টকম (CENTCOM)—মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড—অবস্থিত।

আপনারা অনেক সময় খবরের শিরোনামে শুনে থাকেন—‘মার্কিন যুদ্ধবিমান মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানো হয়েছে’ বা ‘মধ্যপ্রাচ্য থেকে মার্কিন সৈন্য সরানো হয়েছে।’ এই মধ্যপ্রাচ্য বলতে নির্দিষ্ট করে কোথায়? আসলে এই কাতারের ঘাঁটিতেই পাঠানো হয় বা এখান থেকেই সরানো হয়।

আর আমরা প্রায়ই দেখি বিভিন্ন স্টেটমেন্ট আসে—‘সেন্টকম-এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে’। এই সেন্টকম-এর মধ্যপ্রাচ্য অফিস কোথায়?—কাতারে।

সুতরাং, ইরানের এই হামলা মানে হচ্ছে—মূলত মার্কিন ঘাঁটিতে আঘাত করা। এবং এটি কাতারের জনগণের বিরুদ্ধে কোনো হামলা নয়।"


এই হামলায় কিছু ছবি বা ভিডিও ফুটেজ এসেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে—কয়েকটি মিসাইল খালি জায়গায় পড়েছে বা কিছু আবাসিক এলাকায় গিয়ে পড়েছে। তবে এর বাইরে বড় কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা বড় ধ্বংসের খবর নেই।

অনেক সংবাদমাধ্যম বলছে—এটা ছিল একটা ‘প্রতীকী হামলা’। এবং এই প্রতীকী হামলা চালানোটা ইরানের জন্য একরকম প্রয়োজন ছিল।

আমরাও আজ সকালেই লাইভে বলেছিলাম—ইরানের এমন একটি প্রতীকী আক্রমণ হতে পারে, এবং সেটা হয়তো ইরাক বা সিরিয়ায় হতে পারে। কিন্তু এবার দেখা যাচ্ছে—ইরাক বা সিরিয়ার বদলে কাতারকেই এই আঘাতের জন্য বেছে নেয়া হয়েছে।

এর কারণও পরিষ্কার—কাতারের আল-উদেইদ সামরিক ঘাঁটি পুরোপুরি মার্কিন সেনারা ব্যবহার করে থাকে। সেই ঘাঁটিতেই এই হামলা হয়েছে।

এখন প্রশ্ন—এই আক্রমণ কতদূর গড়াবে? 
আমেরিকা কি এর পর পাল্টা জবাব দেবে?
বা এটা কি একধরনের পূর্ব-সমঝোতার আক্রমণ?

কারণ কিছু সংবাদে এমনও বলা হচ্ছে—আসলেই কি এটা এক ধরনের ‘যোগসাজশ’-এর মতো ছিল?
অর্থাৎ—‘আমি তোমার ঘাঁটিতে আক্রমণ করবো, কিন্তু আগে থেকে জানিয়ে দিলাম। তুমি চাইলে সরে যাও, যাতে বড় ক্ষয়ক্ষতি না হয়।’

এমনও বলা হচ্ছে—আসলে এই হামলার উদ্দেশ্য ছিল প্রতীকী বার্তা দেয়া—না যে বড় ক্ষয়ক্ষতি করা।

কমাতে চাও, তাহলে সেখান থেকে সরে যাও।’
এমন বার্তা দেয়ার পর—আমেরিকান ফোর্স সেখান থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলোও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এখন পর্যন্ত বিভিন্ন সূত্র—বিশেষ করে রয়টার্স, নিউইয়র্ক টাইমস সহ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যাচ্ছে—

এদিকে ইরাকে অবস্থিত আল-আসাদ এয়ারবেস-এও ইরান মিসাইল হামলা চালিয়েছে বলে খবর এসেছে।

অর্থাৎ একসাথে কাতার এবং ইরাকে এই আক্রমণ হয়েছে।




ইরান একই সাথে ইরাকেও আক্রমণ করেছে বলে খবর এসেছে।
কাতারের আমেরিকার ঘাঁটিতে ৬টি, আর ইরাকের আমেরিকার ঘাঁটিতে ১টি মিসাইল ছোড়া হয়েছে বলে বলা হচ্ছে।

তবে ইরাকের কর্মকর্তারা বলেছেন, ইরাকের আল-আসাদ বিমানঘাঁটিতে এখনও ইরানের কোনো ড্রোন বা মিসাইল হামলা হয়নি।

যাই হোক, কাতারে হামলার পর সেখানে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সরঞ্জামগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সেগুলো এখন সৌদি আরব এবং জর্ডানের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে রাখা হয়েছে। বিমানঘাঁটির কাছাকাছি কোথাও সামরিক সরঞ্জাম সরিয়ে রাখা হয়, যাতে ঝুঁকি কম থাকে।

সবচেয়ে বড় প্রশ্ন ছিল—এই হামলা আগে থেকে জানানো হয়েছিল কি না, এবং এতে বড় কোনো উত্তেজনা সৃষ্টি হবে কি না। এই বিষয়ে কিছু সূচক আছে। যেমন, আন্তর্জাতিক পুঁজিবাজার এবং আন্তর্জাতিক তেলের বাজার।

যদি কোনো হামলার পর তেলের দাম বেড়ে যেতো, তাহলে বোঝা যেতো পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত।
কিন্তু ইরানের আক্রমণের পর বিশ্ব তেলের বাজারের দাম কমেছে প্রায় ৬%। অর্থাৎ বিশ্ব মার্কেট মনে করছে, এখানে যেটা ছিল একটা ফাঁস, একটা বাষ্প বিস্তার — সেটা এখন ধ্বংস হয়ে গেছে, এবং পরিস্থিতি এখন শান্ত হওয়ার পথে।


এইটা একটা ধরনের নিম্নচাপের মতো, বা ঝড় আসার আগে ঝঞ্ঝার মতো অবস্থা, তারপর ঠান্ডা থাকবে—এমনই একটা ইঙ্গিত দিচ্ছে আন্তর্জাতিক তেল বাজার।

অর্থাৎ, ইরান এই আক্রমণ দিয়ে একটা প্রতীকী বার্তা দিয়েছে। এবার এই আক্রমণের পর হয়তো ইরান ও আমেরিকার মধ্যে কোনো সমঝোতা বা সমঝোতা আসতে পারে।

কিন্তু বারবার যে বিষয়টা সামনে আসে, সেটা হলো ইসরাইল। ইসরাইল কি চায়? ইরানের এই আক্রমণের পরপরই ইসরাইল তেহরানে আঘাত হানিয়েছে।

এদিকে, এই আক্রমণের পর মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ, যেমন কুয়েত, তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে। আরো দুই-তিনটি দেশ তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে যাত্রীবাহী বিমানের চলাচল বন্ধ করেছে।
গালফ অঞ্চলের যতগুলো দেশ আছে, তারা সবাই সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

ইরাকের পরে জর্ডান, সৌদি আরব, বাহরাইন, কাতার, কুয়েত, এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত—all তারা তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে। এই আকাশসীমার ওপর দিয়ে এখন কোন বিমান চলাচল করছে না।

কারণ হলো, ইরান বলুক বা বলুক না, যদি এমন কয়েকটি আক্রমণ ঘটে, এবং যদি কোন যাত্রীবাহী বিমানে আঘাত লাগে, তাহলে কী ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হবে তা নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ রয়েছে।

ইরানের রাজধানী তেহরান, কারাজ এবং ইসফাহানে ইসরাইলের হামলার খবর এসেছে। ইতিমধ্যে তেহরানের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে দুইবার বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে।

ইসরাইল বলছে, ইরান যেভাবে কাতারে আক্রমণ করেছে, তার পর তারা ইসরাইলের ওপর আক্রমণ করতে পারে। কিন্তু গত দুইদিন ধরে ইসরাইল ব্যাপকভাবে ইরানের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়েছে।

ইরানের বিপ্লবী গার্ড জানিয়েছে, আমেরিকার ওপর তাদের প্রতিশোধ ছিল তাদের কাতারের আমেরিকার ঘাটিতে আক্রমণ। সেই হামলায় ওই ঘাটিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তারা বলেছে, তারা আরও কিছু বলবে।


ইরানের বিপ্লবী গার্ড বলছে, এই আক্রমণের মাধ্যমে তারা আমেরিকা এবং তার দোসরদের কাছে স্পষ্ট বার্তা দিতে চাইছে যে,ইরান কোনো সাধারণ দেশ নয় যেখানে আপনি তার ভূখণ্ডে প্রবেশ করে আক্রমণ করে চলে যেতে পারেন আর সে নিরব দর্শক হয়ে থাকবে।
ইরান এমন কোনো দেশ নয় যারা নিজের সীমানায় আঘাত সহ্য করে কোনো প্রতিহিংসা বা পাল্টা আক্রমণ ছাড়া থাকবে না। যে কেউ ইরানের দিকে চোখ বাড়াবে, সেই চোখ তুলে দেওয়া হবে, যে কেউ ইরানের দিকে হাত বাড়াবে, সেই হাত ভেঙে দেওয়া হবে। অর্থাৎ, কেউ ইরানের ওপর আক্রমণ করলে তার পাল্টা আক্রমণ অবশ্যই করা হবে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানাচ্ছে, এখন পর্যন্ত ছয়টি ইরানি মিসাইল কাতারের আল উদাইদা বিমান ঘাটিতে আঘাত হেনেছে।
কাতারের এয়ার ডিফেন্স এবং আমেরিকার এয়ার ডিফেন্স থেকে যথেষ্ট পরিমাণ মিসাইল ছোড়া হয়েছে হামলা প্রতিহত করার জন্য।

তথ্য অনুযায়ী, তেলের বাজারে দাম ৬% কমে ৬৯.৫ ডলার প্রতি ব্যারেল হয়েছে, যা গত এক সপ্তাহে সবচেয়ে কম।

এদিকে, আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনকে সতর্ক করেছেন।
রাশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মেদভেদেভ আমেরিকার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে বলেছে, ইরানের ওপর আমেরিকার আক্রমণের কারণে এখন অনেক দেশ ইরানকে পরমাণু অস্ত্র দিতে প্রস্তুত। ট্রাম্প বলছে, পুতিন এই বিষয় নিয়ে খুব সতর্ক, এবং পরমাণু অস্ত্র দেওয়া উচিত নয়। বড় বড় রাষ্ট্রনায়করা এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, এবং বিশ্বাস করা হচ্ছে পুতিন সঠিক সিদ্ধান্ত নিবেন।

মধ্যপ্রাচ্যের জটিল রাজনীতি আর ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রতিচ্ছবি। আসলে, এখানে অনেকগুলো ইস্যু ও উদ্বেগ জড়িত:

  1. ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে বিশ্বর সর্বোচ্চ শক্তিগুলোর অবস্থান এবং চাপ অনেক আগ থেকেই।
    — আমেরিকা ও ইসরাইল চাইছে, ইরানের পরমাণু সামর্থ্য পুরোপুরি বন্ধ হোক।
    — কিন্তু ইরানের প্রতিবেশী বা মিত্র দেশগুলো এখন পরমাণু অস্ত্র সরবরাহের জন্য প্রস্তুত, যা উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
    — এটা একটা ঝুঁকিপূর্ণ খেলায় পরিণত হচ্ছে যা পুরো অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করতে পারে।

  2. মধ্যস্থতার চেষ্টা ও বিরোধ
    — চীন এখন শান্তি বজায় রাখার জন্য আগ্রহী, তারা ইরানের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে না দেওয়ার চেষ্টা করছে।
    — রাশিয়াও একটা নিরপেক্ষ অবস্থান নিতে চাইছে, যদিও তারা ইরানের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ।
    — তাই দুই বড় শক্তির মধ্যস্থতা থাকলে হয়তো উত্তেজনা কিছুটা কমানো যেতে পারে।

  3. অস্ত্রপ্রযুক্তি ও মিসাইলের বিস্তার
    — এখানে রাষ্ট্রীয় সংগঠন ছাড়াও প্রক্সি গ্রুপ, সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান হাতে মিসাইল রাখছে।
    — এর ফলে, ছোটোখাটো ঘটনা বড় আকারে রূপ নিতে পারে।
    — মিসাইল হামলার সম্ভাবনা বেড়ে যায়, যেখানে যেকোনো ভুল হিসেব বড় সংঘাতের সূচনা করতে পারে।

  4. ইসরাইলের ভূমিকা
    — ইসরাইল চায় এই উত্তেজনা বজায় থাকুক যাতে আমেরিকা এবং তারা নিজেদের নিরাপত্তা এবং প্রভাব বজায় রাখতে পারে।
    — তবে এভাবে যদি বড় সংঘাত ঘটে, তার প্রভাব পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়বে, যা সবার জন্যই ক্ষতিকর।

সামগ্রিকভাবে:

  • এটা স্পষ্ট যে, কোন এক পক্ষের একক বিজয় বা পরাজয় দিয়ে শান্তি আসবে না।

  • বড় রাষ্ট্রগুলোকে শান্তির জন্য কূটনৈতিক উদ্যোগ নিতে হবে।

  • বিকল্প হিসেবে অস্ত্রবাজি কমিয়ে আলোচনাই সবচেয়ে ভালো পথ।

  • আর প্রাথমিক সতর্কতা ও প্রস্তুতি থাকা জরুরি, যেন ভুলবশত বড় ধরনের সংঘাত এড়ানো যায়।

তুমি কি ভাবো, ভবিষ্যতে এই সংকট থেকে কিভাবে উত্তরণ সম্ভব?
কোন পক্ষের বা কাদের উদ্যোগে শান্তি আসতে পারে বলে মনে করো?




যাই হোক, এই পরিস্থিতিকে সামনে রেখে সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, বাহরাইন, কুয়েত এবং ইরাক তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে। তেহরানে এখন আক্রমণ হচ্ছে, তাবরিজেও আক্রমণের খবর আসছে। এভাবেই খবরগুলো আসছে। এখনো পর্যন্ত কাতারে অবস্থিত আমেরিকার ঘাটিতে ইরানের আক্রমণে কোনো হতাহতের খবর আসেনি, অর্থাৎ কেউ আহত বা নিহত হয়নি। আমেরিকার সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন তারা নিশ্চিত যে তাদের কাছে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী কাতার ছাড়া অন্য কোন দেশের আমেরিকার ঘাটিতে আক্রমণ হয়নি।

প্রশ্ন হচ্ছে, কাতারে আক্রমণটি কি শুধু লোক দেখানো ছিল? কিছুটা লোক দেখানোই বলা যায়। আন্তর্জাতিক টার্মে যাকে বলে ‘রুলস অফ এনগেজমেন্ট’। অর্থাৎ, তুমি আমাকে যেই লেভেলে থাপ্পড় দিবা, আমি তোমাকে সেই লেভেলে থাপ্পড় দেয়ার অধিকার রাখি এবং যদি আমি সমান লেভেলে প্রতিক্রিয়া দিই তাহলে তা সমান হয়ে যায়, তারপর আলোচনা সম্ভব। যেমন আমরা ইরান-পাকিস্তান ঘটনায় দেখেছি, পাকিস্তান থেকে ইরানের উপরে আক্রমণ হয়েছিল, এরপর ইরান থেকে পাকিস্তানের উপরে পাল্টা আক্রমণ। এতে কিছু ঘাটি ও লোক নিহত ও আহত হয়েছিল।

এটাই সর্বশেষ অবস্থা। দেখা যাক আজ রাতে কি হয়। আমরা এমন একটা সময় পার করছি যেখানে প্রত্যেক মিনিটে, প্রত্যেক ঘন্টায়, প্রত্যেক দিনে কয়েক মাসের ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

বিভিন্ন প্লাপফর্ম থেকে পাওয়া তথ্য মতে - কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের মিসাইল হামলা হলো একটা বড় ইভেন্ট, যা স্পষ্টই আমেরিকার উপর ইরানের প্রতিশোধের অংশ। এর ফলে বিশ্ব রাজনীতিতে এবং মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে বড় ধরণের উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এর পর কী হতে পারে, সেটা কয়েকটা সম্ভাবনা দেখা যেতে পারে:

  1. আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়বে: ইরান ও আমেরিকার মধ্যে টানাপোড়েন আরও বাড়তে পারে। পাশাপাশি ইসরাইল, সৌদি আরব, এবং অন্যান্য উপসাগরীয় দেশগুলোর নিরাপত্তা সতর্কতা জোরদার হতে পারে।

  2. মোটামুটি পাল্টা পাল্টি আক্রমণ: যেমনটা আগে হয়েছিল, এবারও হয়তো আমেরিকা বা তার মিত্ররা ইরানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক কোনো সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে।

  3. ডিপ্লোম্যাটিক আলোচনার পথ: অনেক বড় দেশ যেমন চায়না, রাশিয়া, এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইস্যুটাকে সরাসরি সামরিক সংঘাতের বদলে কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করতে পারে।

  4. তেল বাজারে অস্থিরতা: মধ্যপ্রাচ্যের এই সংকট তেল বাজারে দাম ওঠানামা এবং অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে, যা বিশ্ব অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলবে।

  5. সন্ত্রাসী/প্রক্সি গোষ্ঠীগুলোর ভূমিকা: এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন প্রক্সি সংগঠন বা অরাজনৈতিক গোষ্ঠী আরও সক্রিয় হয়ে পড়তে পারে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করতে পারে।

তাই, পরবর্তী ঘটনাগুলো আন্তর্জাতিক কূটনীতির ওপর নির্ভর করবে—কীভাবে বড় শক্তিগুলো নিজেদের পদক্ষেপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে আর পরিস্থিতি আরও বিকট রূপ না নেয়। আপাতত, সবাই খুব সতর্ক অবস্থায় আছে এবং যে কোনো সময় পরিস্থিতি দ্রুত বদলাতে পারে।



0 Comments:

Post a Comment

Featured Post

Ukraine war briefing: Trump says US looking at providing Kyiv with more Patriot missiles

 26-06-2025 Ukraine war briefing: Trump says US looking at providing Kyiv with more Patriot missiles President’s comments follow meeting wit...

Popular Posts

GENRES

Subscribe Us

 
Created By Jaaj Multimedia | Distributed By Jaaj Multimedia